কৃষক ও বিনিয়োগকারীদের পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রির সুযোগ করে দিতে দেশের প্রতিটি উপজেলাসহ মোট ৫২০টি গ্রামীণ বাজার তৈরি করবে সরকার।
Published : 31 Oct 2017, 06:27 PM
প্রতিটি তিনতলা বিশিষ্ট ৪ থেকে ১০ হাজার বর্গফুটের বাজার তৈরিতে ব্যয় হবে এক হাজার ৭৩০ কোটি টাকা ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এ বছর প্রকল্পের কাজ শুরু করে আগামী ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ করবে।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এদিন একনেকের সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গ্রামীন বাজার প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, “দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে অবকাঠামো নির্মাণের উদ্দেশ্যেই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রত্যোকটি বাজারে কৃষদের পণ্য বিক্রির আলাদা জায়গা থাকবে।”
তিনি বলেন, “এখন বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় আমাদের মহিলারা বাজার গিয়ে বেচাকেনা করেন না। সেই পরিবেশও নেই। প্রস্তাবিত বাজার নির্মাণ করা হলে সেই পরিবেশ হবে এবং গ্রামীণ মহিলারা তাদের উৎপাদিত নানা রকম পণ্য ক্রেতার কাছে সরাসরি বিক্রি করতে পারবেন।
“এতে বিক্রেতা আর ক্রেতা দুজনেই লাভবান হবেন। মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না।”
গ্রামীণ বাজার প্রকল্পসহ এদিন প্রায় ১৫ হাজার ২২২ কোটি টাকা ব্যয়ের ৮টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
এসব প্রকল্পে প্রায় ৩ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ১০ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা আর বাকী ৫২৯ কোটি টাকা বিশ্ব ব্যাংকের কাছ থেকে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে নেওয়া হবে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, সভায় ‘ঢাকাস্থ উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনসাধারণের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ’ প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় এক হাজার ৮৭২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। একইসঙ্গে মেয়াদ আরও চার বছর বাড়িয়ে ২০২০ সালে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পটি উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে ২১৪ একর জমির ওপর প্রত্যেকটি ১৬ তলা বিশিষ্ট ২৪০টি ভবন তৈরির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ওই নকশা অনুসারে এক হাজার ২৫০ বর্গফুটের ১৫ হাজার ৩৫টি এবং এক হাজার ৫০ বর্গফুট আয়তনের চার হাজার ৩২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করার কথা ছিল।
“বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন নিম্ম আয়ের মানুষের জন্য ৮৫০ বর্গফুটের এক হাজার ফ্ল্যাট বানাতে। তিনি বলেছেন, ভবন যা আছে তাই থাকবে। এরমধ্যে নতুন করে এক হাজার ৮৫০ বর্গফুটের এক হাজার ফ্ল্যাট তৈরি করতে হবে। এখন সেই নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।”
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে-
জামালপুর-কালিবাড়ি-সরিষাবাড়ি সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ২১৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা। এর ব্যায় ১৯১ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ১২০ কোটি টাকা।
মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি (২য় পর্যায়) প্রকল্প। এর ব্যয় ১ হাজার ৩৩০ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
বাকেরগঞ্জ-বরগুনা ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন এবং বরগুনা ১৩২/৩৩ কেভি উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প। ব্যয় ১৪৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ আঞ্চলিক যোগাযোগ প্রকল্প-১: ন্যাশনাল সিংগেল উইন্ডো বাস্তবায়ন এবং কাস্টমস আধুনিকায়ন জোরদারকরণ প্রকল্প। ব্যয় ৫৮৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।